গত বছর নভেম্বর থেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিজেদের কাছে রাখার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা ব্যাংকগুলোর ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছিল। তবে ১০ মাস পর এখন ঘরে রাখা সেই টাকা ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর দুই মাসে ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি জমা পড়েছে ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক থেকে টাকা তোলার প্রবণতা ছিল কিছু কারণে—যেমন উচ্চ মূল্যস্ফীতি, নির্বাচনকেন্দ্রিক অনিশ্চয়তা, দুই ঈদের অতিরিক্ত খরচ, ব্যাংক মার্জের খবর, এবং জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের প্রভাব। এই পরিস্থিতিতে মানুষ টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নিজেদের কাছে রাখে। তবে বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ায়, মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে ব্যাংক খাতে এবং ফলে টাকা ব্যাংকে ফিরে আসছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর শেষে ছাপানো টাকার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৫২ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৫১ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় ও সোনালী ব্যাংকের চেস্ট শাখায় ছিল এবং ২১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা ব্যাংকগুলোর ভল্টে। অক্টোবরের শেষে, মানুষের হাতে থাকা টাকা ছিল দুই লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। এটি গত আগস্টে মানুষের হাতে থাকা টাকার চেয়ে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা কম, যা বোঝায় যে মানুষ টাকা ব্যাংকে জমা করছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, "সরকার পতনের পর ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকা বেড়ে গিয়েছিল, তবে তা কমে এখন মানুষের হাতে থাকা টাকা ব্যাংকে ফিরে এসেছে, যা ব্যাংক খাতে মানুষের আস্থা ফেরানোর লক্ষণ।"
এছাড়া, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তারল্য সহায়তার ফলে গ্রাহকদের আস্থা কিছুটা ফিরেছে, এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতেও ভালো ব্যাংকগুলোর ডিপোজিট বৃদ্ধি পেয়েছে।